বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি সমূহ
বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি সমূহ এর আলোচনা করতে গেলে প্রথমে দেখা যাক বাংলাদেশ অখণ্ড বঙ্গদেশের একটি অংশ। বাংলাদেশের মোট আয়তন ৫৬,৯৭৭ বর্গমাইল বা ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার। এই অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতির বর্ণনায় অত্যন্ত স্বাভাবিকভভাবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, গারো পাহাড়ি অঞ্চল, সিলেট-সংলগ্ন পাহাড়ি অঞ্চল এবং ত্রিপুরার কথা চলে আসে। সর্বোপরি এই ভূখণ্ড তৈরির সাথে জড়িয়ে আছে হিমালয় পর্বতমালার উত্থান এবং নেপাল ও তিব্বত উপত্যাকা সৃষ্টির বিষয়।
বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতির প্রকার সমূহ
১। টারশিয়ারী যুগের পাহাড়সমূহ
২। প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ
৩। সামপ্রতিককালের প্লাবন সমভূমি।
বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি সমূহ এর ব্যাখ্যা
১। টারশিয়ারী যুগের পাহাড় সমূহঃ দক্ষিণপূর্ব ও উত্তর পূর্ব অঞ্চলের পাহাড়সমূহ এ বিভাগের অন্তর্গত। পাহাড়গুলোকে আসামের লুসাই এবং আরাকানের পাহাড়ের সমগোত্রীয় বলে ধারণা করা হয়। এ পাহাড়গুলো বেলেপাথর, শেল পাথর ও কর্দম দ্বারা গঠিত। দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহের গড় উচ্চতা ৬১০ মিটার। এখানে রয়েছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ বিজয় (তাজিংডং), উচ্চতা ৩১৮৫ ফুট। উত্তর পূর্বাঞ্চলের পাহাড়গুলোর সর্বোচ্চ উচ্চতা ২৪৪ মিটার। কোথাও কোথাও এদের উচ্চতা ৩০ থেকে ৯০ মিটার।
২। প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহঃ আনুমানিক ২৫,০০০ বছর পূর্বের সময়কে প্লাইস্টোসিনকাল বলা হয়। উত্তর পশ্চিমাংশের বরেন্দ্রভূমি, মধ্যভাগের ভাওয়ালের গড় এবং কুমিলা জেলার লালমাই পাহাড় ও উচ্চভূমি এ বিভাগের অন্তর্গত। এ অঞ্চলের মাটির রং লাল ও ধুসর।
৩। সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমিঃ টারশিয়ারী গুগের পাহাড়সমূহ এবং প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ চাড়া সমগ্র বাংলাদেশ এক বিস্তীর্ণ সমভূমি। এটি নদীবিধৌত পলি দ্বারা সুষ্ট এক বিস্তীর্ণ সমভূমি। প্লাবন সমভূমি বাংলাদেশের উত্তরাংশ থেকে উপক‚লের দিকে ক্রমনিম্নভাবে নেমেছে।
চর ও দ্বীপ
চর অবস্থান দ্বীপ অবস্থান
দুবলার চর সুন্দরবন সেন্টমার্টিন কক্সবাজার
পাটনি চর সুন্দরবন মহেশখালী কক্সবাজার
মুহুরীর চর ফেনী ছেড়া দ্বীপ কক্সবাজার
উড়ির চর নোয়াখালী সোনাদিয়া কক্সবাজার
চর ওসমান নোয়াখালী কুতুব দিয়া কক্সবাজার
চর কমলা নোয়াখালী দক্ষিণ তালপট্টি সাতক্ষীরা
চর মানিক ভোলা মনপুরা ভোলা
চর জব্বার ভোলা নিঝুম নোয়াখালী
চর নিউটন ভোলা সন্দীপ চট্টগ্রাম
চর ফ্যাশন ভোলা
চর জংলী ভোলা
চর কুকড়ি মুকড়ি ভোলা
চর আলেকজান্ডার লক্ষীপুর
চর গজারিয়া লক্ষীপুর
নির্মল চর রাজশাহী
পাহাড়-পর্বত
কেওক্রাডং: বান্দরবান জেলায় অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। উচ্চতা ২৯২৮ ফুট।
চিম্বুকঃ বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম চিম্বুক। উচ্চতা ২৪০০ ফুট। এটিও বান্দরবান জেলায় অবস্থিত।
গারোপাহাড়ঃ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পাহাড়ের নাম গারো। এটি ময়মনসিংহ জেলায় অবস্থিত।
জলপ্রপাত ও ঝরণাঃ
১. দেশের প্রধান নৈসর্গিক জলপ্রপাতের নাম মাধব কুন্ড। এটি মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থতি।
২. দেশের মীতল পানির ঝরণা অবস্থিত কক্সবাজারের হিমছড়ি পাহাড়ে।
৩. দেশের একমাত্র গরম পানির ঝরণা অবস্থিত চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে।
বাংলাদেশের নদীঃ
নদী উৎপত্তিস্থল | |
পদ্মা হিলাময় পর্বতের গাঙ্গোত্রী হিমবাহ | |
ব্রক্ষপুত্র, যমুনা তিব্বতের কৈলাস শঙ্গের মানস সরোবর হ্রদ | |
মেঘানা আসামের নাগা মনিপুর পাহাড়ের দক্ষিণে লুসাই পাহাড় | |
কর্ণফুলী মিজোরামের লুসাই পাহাড় | |
করতোয়া সিকিমের পার্বত্য অঞ্চল | |
মাতামুহুরী লামার মইভার পর্বত | |
ফেনী পার্বত্য ত্রিপুরা পাহাড় | |
তিস্তা সিকিমের পার্বত্য অঞ্চল | |
মহানন্দা হিমালয় পর্বতমালার মহালদিরাম পাহাড় |
প্রধান নদীগুলোর শাখা-উপনদীঃ
শাখা নদীঃ
১. পদ্মাঃ ভৈরব, কুমার, মধুমতি, আড়িয়ালখাঁ, মাথাভাঙ্গা, গড়াই।
২. যমুনাঃ ধলেশ্বরী
৩. ব্রক্ষপুত্রঃ যমুনা
৪. ভৈরবঃ কপোতাক্ষ, পশুর।
৫.মেঘনাঃ তিতাস, ডাকাতিয়া
উপনদীঃ
১. পদ্মাঃ মহানন্দা, কপোতাক্ষ।
২. যমুনাঃ তিস্তা, করতোয়া, ধরলা, আত্রাই
৩. মেঘনাঃ গোমতি, মনু, বাউলাই, কংস, সোমেশ্বরী
৪. কর্ণফুলীঃ হালদা, কাসালং বোয়ালখালী
৫. মহানন্দাঃ পূনর্ভবা, টাঙ্গন, নাগর।
Facebook: https://www.facebook.com/super30bangladesh.
Youtube: https://www.youtube.com/c/super30bangladesh-BCS-preparation.
Instagram: https://www.instagram.com/super30bangladesh/