বাংলাদেশের শিল্প সম্পদ এর উন্নয়ন
বাংলাদেশের শিল্প সম্পদ এ এখনও কাঙ্খিত সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। শিল্পখাতগুলোতে যথাযথ দিকনির্দের্শন, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদান, সরকারী আনুকুল্য প্রভৃতির মাধ্যমে অবস্থান মান উন্নয়ন সম্ভব। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সরবরাহ, ভালো যাতায়াত ব্যবস্থা, শ্রমের সহজলভ্যতা, অনুকুল রাজনৈতিক পরিবেশ, ইত্যাদি বিষয়গুলোকে বাংলাদেশের শিল্প সম্পদ উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
পাট শিল্পঃ বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের সৎমধ্যে পাট শিল্প সর্ববৃহৎ। শিল্পে নিয়োজিত মোট শ্রমিকের প্রায় ৪৮% এ শিল্পে নিয়োজিত। এ শিল্পে উৎপাদিত সামগ্রীর ৮৫% বিদেশে রপ্তানী করা হয় সুতরাং পাট একটি রপ্তানিমুখী শিল্প। আমাদের দেশের পাট রপ্তানির পরিমাণ বিশ্ব রপ্তানির প্রায় ৪৪ ভাট। ভারত বিভাগের সময় এ অঞ্চলে কোনো টাটকল ছিল না। ১৯৫১ সালে এ দেশের প্রথম পাটকল স্থাপিত হয়।
বস্ত্র শিল্পঃ
বর্তমান অর্থনীতিতে বস্ত্র শিল্প বাংলাদেশের শিল্প সম্পদ এর প্রধানবৃহৎ শিল্প। ৮০-এর দশক থেকে বাংলাদেশে এ কাতের উৎকর্য ও বিকাশ শুরু হয়। ১৯৪৭ সালে যেখানে কাপড় কলের সংখ্যা ছিল মাত্র ৯টি, সেখানে বর্তমানে কাপড় কলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৯টিতে।
বাংলাদেশের শিল্প সম্পদ এ পোশাক শিল্প এর গুরুত্ব
অন্যেন্য শিল্পখাত এ তেমন উন্নতি না হলে বাংলাদেশের পোশক শিল্প দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে পোশাক শিল্পের আজ একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে। নিম্নে পোশাক শিল্প নিয়ে আলোচনা করা হলো।
তৈরী পোশাক শিল্পঃ দেশের শিল্পখাতে সবচেয়ে উলেখযোগ্য ও আমাব্যাঞ্জক শিল্প হচ্ছে তৈরি পোশাক শিল্প। বলা যায়, দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে পোশাক শিল্পের আজ একচ্ছত্র আধিপত্য। এমনটি গার্মেন্টস শিল্পে বাংলাদেশ পৃথিবীর অষ্টম স্থান অধিকার করেছে। ৭০-এর দশকে এ শিল্পের যাত্রার সময় এর সংখ্যা ছিল মাত্র ২টি। ১৯৮৩ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৬টিতে এবং বর্তমানে রয়েছে প্রায় ২০০০টি, যার শ্রমিক সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ।
কাগজ শিল্পঃ ১৯৪৭ সালে বাংলাদেশে কোনো কাগজের কল ছিল না। ১৯৫৩ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের চন্দ্রঘোনায় প্রথম কাগজের কল স্থাপিত হয়। ১৯৫৯ সালে খুলনায় একটি নিউজপ্রিন্ট মিল স্থাপন করা হয়। কাঁচামাল হিসেবে বাঁশ, কাঠ, আখের ছোবড়া, নলখাগড়া, কাঁচাপাট, ধানের খড় ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশের শিল্প সম্পদ এ সার শিল্প অন্যতম
বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। শস্যোৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সার ব্যবহার অপরিহার্য। নিম্নে বাংলাদেশের শিল্প সম্পদ মধ্যে সার শিল্প নিয়ে আলোচনা করা হলো:
সার শিল্পঃ বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। শস্যোৎপাদন বৃদ্ধির জন্য যে কয়টি প্রয়োজনীয় উপকরণ রয়েছে তার মধ্যে সার অন্যতম। স্বাধীনতার পূর্বে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে প্রথম সারকারখানা স্থাপিত হয়। ১৯৬১ সালে। বর্তমানে এ দেশের ৮টি সার কারখানা রয়েছে। বেশিরভাগ কারখানায় কাঁচামাল হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
চিনি শিল্পঃ ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় এ দেশের ৫টি চিনিকল ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশে চিনিকলের সংখ্যা ১৭টি। এ শিল্প অনেকটা কৃষিনির্ভর। কারণ এ শিল্পের প্রধান কাঁচামাল আসে আখ থেকে।
চা শিল্পঃ চা শিল্প বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানিমুখী শিল্প। দেশের ৮টি জেলায় চা শিল্প গড়ে ওঠেছে। সর্বশেষ দেশের উত্তর জনপদের ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙি উপজেলায় চা চাষ কার্যক্রম শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে দিনাজপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাটে ও চা চাষ কার্যক্রম শুরু হবে। বাংলাদেশে সর্বমোট ১৬৩টি চা বাগান রয়েছে।