“সবার সাথে মিত্রতা কারো সাথে শত্রুতা নয়” এই নীতিকেই আকড়ে ধরে বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্ক গড়ে উঠে ।বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরে প্রায় চার দশকেরও অধিক সময় পার হয়ে গেছে।এই সময়ে বৈদেশিক নীতিতে বাংলাদেশ নিজেদের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।বাংলাদেশ স্বাধীন হবার সময় বিশ্বশক্তি গুলো দ্বিধাবিভক্ত ছিল।
বর্তমান সময়ে সম্পর্ক ভালো হতে শুরু করেছে সেই বিশ্বশক্তিগুলোর সাথেও যারা একসময় বাংলাদেশের জন্মকে রুখে দিতে চেয়েছিল।
একটি ফুল যখন প্রস্ফুটিত হয় তার সুবাস চারদিকে ছড়িয়ে পরে। বৈশ্বিক বাগানে বাংলাদেশ সদ্য প্রস্ফুটিত ফুল যার সৌরভ দিন দিন ছড়িয়ে পরছে দূর হতে দূর দিগন্তে।
বাংলাদেশের মহান সংবিধান পররাষ্ট্রনীতিতে অসাধারণ কিছু বিধানের সংযোজন ঘটিয়েছে। এসব নিয়মের বেশির ভাগই উদারতান্ত্রিক পররাষ্ট্রনীতি তৈরিতে সহায়তা করে—–
পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত কিছু নিয়ম সংবিধানে বর্ণিত হয়েছে। এগুলি হলো:
♣♣♣♣
জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সমতার প্রতি শ্রদ্ধা,
অপর রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা,
আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের সনদে বর্ণিত নীতিসমূহের প্রতি শ্রদ্ধা,
এ সকল নীতিই হবে রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভিত্তি এবং এ সকল নীতির ভিত্তিতে-
• রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তিপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকা এবং সাধারণ ও পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের জন্য চেষ্টা করবে;
• প্রত্যেক জাতির স্বাধীন অভিপ্রায় অনুযায়ী পথ ও পন্থার মাধ্যমে অবাধে নিজস্ব সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণ ও গঠনের অধিকার সমর্থন করবে; এবং সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদ বা বর্ণ্যবৈষম্যবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের সর্বত্র নিপীড়িত জনগণের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামকে সমর্থন করবে।
• রাষ্ট্র ইসলামী সংহতির ভিত্তিতে #মুসলিম দেশসমূহের মধ্যে #ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক সংহত, সংরক্ষণ এবং জোরদার করতে সচেষ্ট হবে।
• সংবিধানের ৬৩ অনুচ্ছেদে যুদ্ধ-ঘোষণা সংক্রান্ত নীতি উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে সংসদের সম্মতি ব্যতিত যুদ্ধ ঘোষণা করা যাবে না, কিংবা প্রজাতন্ত্র কোনো যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে না।
• অনুচ্ছেদ ১৪৫(ক)তে বৈদেশিক চুক্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে: ‘বিদেশের সাথে সম্পাদিত সকল চুক্তি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করা হবে, এবং রাষ্ট্রপতি তা সংসদে পেশ করার ব্যবস্থা করবেন। তবে শর্ত হচ্ছে যে, জাতীয় নিরাপত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট অনুরূপ কোন চুক্তি কেবলমাত্র সংসদের গোপন বৈঠকে পেশ করা হবে।’
এসব সাংবিধানিক নিয়ম পররাষ্ট্রনীতি সহজ করে দেয় কিছুটা।
♣♣ তবে পররাষ্ট্রনীতিতে বাংলাদেশ এখনো তার লক্ষ্যে পৌছুতে অনেক দেরি।.
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি চার যুগের পুরাতন চিন্তাভাবনার উপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে। এটা শুধু সমস্যাই নয়, হুমকিও বটে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অনেকটা অস্থিতিশীল। যেমন একটি সদ্য স্বাধীন দেশের পররাষ্ট্রনীতি হয়ে থাকে। কিন্তু চার দশক পরেও একটি স্থিতিশীল পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ না করাটা হতাশার। সংবিধানের প্রতিফলন তখনই হয় যখন তা কার্যকর হয়ে থাকে।
সবার আগে একটি দেশের পররাষ্ট্রনীতি হওয়া উচিত স্থিতিশীল। উন্নত বিশ্বের পররাষ্ট্রনীতি স্থিতিশীল হয় যার কারনে অন্য দেশগুলোর সাথে বাণিজ্যিক এবং কূটনৈতিক সিদ্ধান্তগ্রহণে সুবিধা হয়।
♦♦বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির সমস্যা:
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে প্রধান সমস্যাগুলো হচ্ছে:—-
♦অস্থিতিশীলতা:
♦দীর্ঘমেয়াদী ও পরিকল্পিত পদক্ষেপের অভাব
♦বিদেশী হস্তক্ষেপ
♦রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ
♦দুর্নীতি
♦একমুখী পদক্ষেপ
♦বিনিয়োগের অপব্যবহার
♦বাণিজ্যিক নির্ভরশীলতা